কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ নিরপরাধ জনসাধারণ হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছেন সুনামগঞ্জ সাংস্কৃতিককর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক কর্মীদের অংশগ্রহণে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সাংস্কৃতিক কর্মীরা গান, কবিতা ও বক্তব্যের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। এসময় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেফতারে নিন্দা জানান। দমন-পীড়নের নাগরিকদের মুক্তচিন্তা, বাকস্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সাংস্কৃতিক কর্মীরা। এসময় বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ স¤পাদক অ্যাড. খলিল রহমান, জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, থিয়েটার সুনামগঞ্জের দলনেতা দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী, সুনামগঞ্জ প্রসেনিয়াম থিয়েটারের দলনেতা সাদিকুর রহমান খান, রঙ্গালয়ের সভাপতি মেহেদী হাসান, নাট্য অভিনেতা জুবায়ের আহমদ খান, শহীদনূর আহমেদ, এ আহসান রাজিব, আব্দুল বাছির, তামিম রায়হান, সোহানুর রহমান সোহান, নাহাত হাসান পৌলমী, তাজরিন হক, জেলি দাস, শুভ তালুকদার, অমিত রায়, মো. শফিকুল ইসলাম, রায়হান প্রমুখ।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্যকালে সুনামগঞ্জ প্রসেনিয়াম থিয়েটারের দলনেতা সাদিকুর রহমান খান বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী ভাইদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী এভাবে গুলি করে নির্বিচারে মারবে এটা মেনে নিতে পারি না। তাই এর প্রতিবাদ জানাতে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়েছি। আমরা চাই আর যেনো কোনো প্রাণ না ঝরে। আমাদের দেশে যেনো শান্তি ফিরে আসে।
সাংস্কৃতিক কর্মী জুবায়ের আহমদ খান বলেন, রাষ্ট্র আমার ভাইকে হত্যা করছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইবো। শিক্ষার্থী হত্যার বিচার না হলে আমরা বার বার শহীদ মিনারে দাঁড়াবো। গণহত্যার বিচার করতে হবে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
নাহাত হাসান পৌলমী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে শিক্ষা নিয়েছি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়। আমাদের ভাই ও বোনদের হত্যার বিচার চাইতে আজ দাঁড়িয়েছি। আর যেনো কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। আর যেনো রাজপথ রক্তে লাল না হয়। আসুন শান্তি ও সৌহার্দ্যের বাংলাদেশ গড়ি।
সাংস্কৃতিককর্মী শহীদ নূর আহমেদ বলেন, যেভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ও হত্যা করা হয়েছে, এটা সত্যি দুঃখজনক। আমরা রাষ্ট্রের কাছে জবাব চাই। সরকারের কাছে জবাব চাই। কেন এই হত্যাকা-। তারা কি তাদের অধিকারের কথা বলবে না?
সাংস্কৃতিককর্মী এহসান রাজিব বলেন, বাংলাদেশের কোনো সংবিধানে লেখা নেই একজন মানুষকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করার। কিন্তু বাংলাদেশে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। আমরা আজকে বলে দিতে চাই, যেসব পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এর আগে বিকেল ৫টা থেকে জেলার বিভিন্ন সংগঠনের সাংস্কৃতিক কর্মীরা সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে সবাই একত্রিত হয়ে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা নিয়ে গান গেয়ে শিক্ষার্থী হত্যার বিচার ও গণগ্রেফতার বন্ধের দাবি জানান। সেই সঙ্গে যেসব শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তির দাবি জানান।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রতিবাদ সমাবেশ : শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবি
- আপলোড সময় : ০২-০৮-২০২৪ ০১:৪১:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০৮-২০২৪ ০১:৪১:৪৯ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ